সরকারি চাকরি পেতে যে ১০টি গুণগুলো থাকতে হবে

 

সরকারি চাকরি পেতে যে গুণগুলো আপনার থাকতে হবে তা আমাদের জানা দরকার। কি যোগ্যতা থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া সহজ হবে? এই প্রশ্নটি হাজারো যুবকের। তাই আপনি যদি একজন সরকারি চাকরিজীবী হবার স্বপ্ন দেখেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন।

সরকারি চাকরি পেতে যে গুণগুলো আপনার থাকতে হবে
সরকারী অথবা বেসরকারী চাকরী হোক সকল চাকরীর জন্য আপনার কিছু স্কিল থাকতে হবে।তাই আপনার সেই স্কিল গুলো আপনাকেই  তৈরি করতে হবে। তাহলে আপনি একজন সরকারি চাকরিজীবী হতে পারবেন। তাই দেরি না করে আসুন সে বিষয়গুলি জানি।

সূচিপত্রঃ সরকারি চাকরি পেতে যে ১০টি  গুণগুলো থাকতে হবে

কিভাবে পড়লে একটি সরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব? 

কিভাবে পড়লে একটি সরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব? কোন কোন বিষয় কতটা পড়লে সরকারি চাকরি আপনার হাতের নাগালে চলে আসবে? সেই বিষয় সম্পর্কে আজকের এই পোস্ট। আশাকরি এই পোস্টটি আপনার কাছে অনেক কার্যকারী হবে। 
সরকারি চাকরি পেতে যে গুণগুলো আপনার থাকতে হবেসম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন সরকারি চাকরি পেতে গেলে। সকল চাকরীর জন্য জন্য অবশ্যই আপনাকে যোগ্য সম্পূর্ণ মানুষ হতে হবে। আপনার শারীরিক যোগ্যতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সবকিছুই ঠিক থাকতে হবে।

ধরুন আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক ভালো মন মানসিকতা অনেক খারাপ তাহলে ভাইবাতে গিয়ে চাকরি নাও হতে পারে। আবার ধরুন আপনার চেহারা অনেক খারাপ কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং রুটি সম্মত মানুষ, ভালো জ্ঞান আপনার মধ্যে রয়েছে। তাহলে আপনি চাকরিটি পেয়ে যেতে পারেন।

সরকারি চাকরি পেতে হলে কিছু সাধারণ গুণ থাকা প্রয়োজন।তা নিম্ন রুপ দেওয়া হলঃ
  • যোগ্যতাঃ সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • পেশাদারিত্বঃ চাকরির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সময়ানুবর্তিতা, এবং কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি।
  • যোগাযোগ দক্ষতাঃ মৌখিক ও লিখিত উভয় ক্ষেত্রে যোগাযোগে পারদর্শী হতে হবে।
  • দলবদ্ধভাবে কাজ করার মানসিকতাঃ অন্যের সাথে সহযোগিতা করার মনোভাব থাকতে হবে।
  • সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতাঃ যেকোনো সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে।
  • নেতৃত্বের গুণাবলীঃ প্রয়োজনে নেতৃত্ব দেওয়ার এবং অন্যদের পরিচালনা করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
  • আত্মবিশ্বাসঃ নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সাহস থাকতে হবে।
  • ধৈর্য ও অধ্যবসায়ঃ সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ধৈর্য ও অধ্যবসায় থাকা প্রয়োজন, কারণ এতে সময় লাগতে পারে।
  • কম্পিউটার জ্ঞানঃ বর্তমান যুগে কম্পিউটার ও প্রাসঙ্গিক সফটওয়্যার ব্যবহারের দক্ষতা থাকা আবশ্যক।
  • সাধারণ জ্ঞান ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর জ্ঞানঃ দেশ-বিদেশের সাধারণ জ্ঞান এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

সরকারি চাকরির জন্য কি কি পড়তে হবে??

বাংলাদেশ লিখিত পরীক্ষার পর নৈব্যক্তিক পরীক্ষা হয়। তারপর মৌখিক পরীক্ষা হয়। তারপরে শারীরিক পরীক্ষা হয়। তারপর পুলিশ ভেরিফিকেশন তো রয়েছেই। অনেক ধাপ পার হয়ে সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। এটি শুধু সরকার চাকরি ক্ষেত্রে নয় বেসরকারি, ব্যাংক, এনজিও সকল চাকরির ক্ষেত্রেই। ভাইবাটি দিতে হবে এবং এই নিয়মগুলো রয়েছে। তাই আপনি যদি সরকারি চাকরিজীবী হতে চান অবশ্যই আপনাকে নিজের একটি যোগ্যতা বা স্কিল তৈরি করতে হবে। 

চাকরী পাওয়ার জন্য আপনি কিভাবে পড়াশোনা করবেন? সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে, বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক), গণিত, এবং কম্পিউটার ও আইসিটি বিষয়ক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও, কিছু কিছু পদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর বিশেষ জ্ঞান দরকার হতে পারে।
 
সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • বাংলাঃব্যাকরণ (৮ম ও ৯ম শ্রেণির বোর্ড বই থেকে)। সাহিত্য (বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী ও কর্ম)।ভাষারীতি ও প্রয়োগ।বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন ও উত্তর।
  • ইংরেজিঃগ্রামার (Tense, Parts of Speech, Voice, Narration ইত্যাদি)।Vocabulary (শব্দার্থ, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ)।Comprehension (Text reading and understanding)। Writing skills (Essay, Paragraph, Letter writing)।
  • সাধারণ জ্ঞানঃ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী। ভূগোল, ইতিহাস, সংস্কৃতি।সাম্প্রতিক ঘটনাবলী। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও চুক্তি।
  • গণিতঃ পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি। ঐকিক নিয়ম, লাভ-ক্ষতি, সুদকষা।বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধান।
  • কম্পিউটার ও আইসিটিঃ কম্পিউটার বেসিক। বিভিন্ন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার। ইন্টারনেট ও তথ্য প্রযুক্তি।
  • মানসিক দক্ষতাঃ যুক্তিবাক্য, সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য, সংখ্যা, কোডিং-ডিকোডিং ইত্যাদি।
  • বিশেষ জ্ঞানঃ কিছু পদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর বিশেষ জ্ঞান থাকতে হয়। যেমন: শিক্ষক পদের জন্য শিক্ষণ পদ্ধতি, বিজ্ঞান পদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান ইত্যাদি।
  • পরীক্ষার প্রস্তুতিঃ পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করা। বিভিন্ন মডেল টেস্ট দেওয়া।বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন কোচিং সেন্টারের সহায়তা নেওয়া।বিভিন্ন স্টাডি গ্রুপে যুক্ত হওয়া।সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য, নিয়মিত পড়াশোনা করা, সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া এবং বিগত বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন রিসোর্স, যেমনঃ ইউটিউব চ্যানেল, বই, এবং কোচিং সেন্টার থেকে সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

সরকারি চাকরির জন্য ইংরেজির বিষয়ের প্রস্তুতি

সরকারি চাকরির জন্য ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতি নিতে হলে, প্রথমে ইংরেজির সাধারণ দক্ষতা এবং তারপর চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ইংরেজি এই দুটি দিকে মনোযোগ দিতে হবে। সাধারণ ইংরেজির জন্য নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়া, সিনেমা বা সিরিজ দেখা, পডকাস্ট শোনা, এবং গ্রামার ও লেখার দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চাকরির পরীক্ষার জন্য, বিগত বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করা, গ্রামার ও লিটারেচার অংশের প্রস্তুতি নেয়া এবং বাজারের প্রচলিত ভালো বই থেকে প্রস্তুতি নেয়া উচিত।

সরকারি চাকরির জন্য ইংরেজি প্রস্তুতি নেবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে আলোচনা করা হলোঃ
  • সাধারণ ইংরেজিঃ নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়াঃইংরেজি ভাষার দক্ষতা বাড়াতে এবং বর্তমান বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত হতে নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করা উচিত। অন্যান্য ইংরেজি পত্রিকা এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
  • ব্যাকরণ ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ইংরেজি ব্যাকরণের বিভিন্ন নিয়মকানুন ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং সেই অনুযায়ী বাক্য গঠন ও লেখার অনুশীলন করতে হবে। ওয়েবসাইট থেকে ইংরেজি ব্যাকরণের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অনুশীলন করতে পারেন।
  • শব্দভান্ডার বৃদ্ধিঃ নিয়মিত ইংরেজি শব্দ শেখা এবং সেগুলোর সঠিক ব্যবহার জানা জরুরি। ইংরেজি সিনেমা, সিরিজ, বা পডকাস্ট শোনার মাধ্যমেও শব্দভান্ডার বাড়ানো যেতে পারে।
  • কথা বলা ও শোনার দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ইংরেজি বলা ও শোনার দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত ইংরেজি কথোপকথন, সিনেমা, বা পডকাস্ট শোনা যেতে পারে।
  • চাকরির পরীক্ষার জন্য ইংরেজিঃ বিগত বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান,চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন এবং কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়, তা জানতে বিগত বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করা খুব জরুরি। টেন মিনিট এর মতো প্ল্যাটফর্মে বিগত বছরের প্রশ্নপত্রের সমাধান পাওয়া যায়।
  • গ্রামার ও লিটারেচার অংশের প্রস্তুতিঃ চাকরির পরীক্ষায় ইংরেজি গ্রামার ও লিটারেচার থেকে প্রশ্ন আসে, তাই এই দুটি অংশের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নেয়া উচিত। গ্রামার অংশের জন্য "ক্লিস টোফেল" (Cliffs TOEFL) বা অন্যান্য বই থেকে প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে। বাজারে প্রচলিত বইয়ের সাহায্য নেয়াঃইংরেজি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বাজারে প্রচলিত ভালো বই, যেমন - "প্যারাগ্রাফ রাইটিং" বা "কম্পোজিশন" এর বই, ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • অনুশীলনঃ নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ইংরেজি ভীতি দূর করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা বই থেকে অনুশীলন করার সুযোগ রয়েছে।বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন সম্পর্কে ধারণা নেয়াঃব্যাংক জব, বিসিএস, বা অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার জন্য ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ধরন সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত।সরকারি চাকরির জন্য ইংরেজি প্রস্তুতিতে নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই ভালো ফলাফল করা সম্ভব। 

সরকারি চাকরির জন্য গণিত বিষয়ের প্রস্তুতি

সরকারি চাকরির জন্য গণিত প্রস্তুতিতে ভালো করতে হলে, প্রথমে মৌলিক গাণিতিক ধারণাগুলো পরিষ্কার করা জরুরি। এরপর, বিগত সালের প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন এবং সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। নিয়মিত অনুশীলন এবং গণিতের বিভিন্ন টপিক-এর উপর দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে এই প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী করা যেতে পারে।

গণিত প্রস্তুতিতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণঃ

১. মৌলিক ধারণা পরিষ্কার করাঃ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, ভগ্নাংশ, অনুপাত, শতকরা, গড়, লাভ-ক্ষতি, সুদকষা ইত্যাদি বিষয়গুলোর মৌলিক ধারণা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

২. সংখ্যার খেলাঃ সংখ্যাতত্ত্ব, লসাগু, গসাগু, মৌলিক সংখ্যা, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

৩. জ্যামিতিঃ রেখা, কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, ইত্যাদি জ্যামিতিক ধারণা এবং তাদের সূত্রগুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে।

৪. পরিমিতিঃ ক্ষেত্রফল, পরিসীমা, আয়তন, ইত্যাদি পরিমাপ করার সূত্রাবলী জানতে হবে।

৫. পাটিগণিতঃ ঐকিক নিয়ম, লাভ-ক্ষতি, সরলীকরণ, ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর জোর দিতে হবে।

৬. বীজগণিতঃ বীজগণিতীয় সূত্রাবলী, সমাধান এবং সমস্যা সমাধান করতে শিখতে হবে।

৭. সময় ও কাজঃ সময় ও কাজের অংকগুলো ভালোভাবে অনুশীলন করতে হবে।

৮. গতিবেগ ও দূরত্বঃ গতিবেগ, দূরত্ব এবং সময় সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধান করতে শিখতে হবে।

৯. পরিসংখ্যানঃ গড়, মধ্যক, প্রচুরক, ইত্যাদি নির্ণয় করার পদ্ধতি জানতে হবে।

১০. বিগত সালের প্রশ্নপত্র সমাধানঃ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন এবং সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা উচিত।

১১. নিয়মিত অনুশীলনঃ প্রতিদিন কিছু সময় গণিত চর্চা করা উচিত। এতে গণিতের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

১২. গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করাঃ পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর উপর বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

১৩. গণিত বিষয়ক বই ও ওয়েবসাইট থেকে সহায়তা নেয়াঃ গণিত বিষয়ক বিভিন্ন বই, ওয়েবসাইট এবং অনলাইন কোর্স থেকে সহায়তা নেয়া যেতে পারে।

১৪. গণিত বিষয়ক গ্রুপে যুক্ত হওয়াঃ ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে গণিত বিষয়ক গ্রুপগুলোতে যুক্ত হয়ে অন্যদের সাথে আলোচনা করা যেতে পারে।

গণিত প্রস্তুতিতে নিয়মিত অধ্যবসায় এবং অনুশীলন সাফল্যের চাবিকাঠি।

সরকারি চাকরির জন্য বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি

সরকারি চাকরির বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি নেবার জন্য, সাহিত্য এবং ব্যাকরণ উভয় অংশে মনোযোগ দেওয়া উচিত। সাহিত্য অংশে, প্রাচীন ও আধুনিক যুগ, বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী ও কর্ম এবং গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। ব্যাকরণ অংশে, ভাষা, শব্দ, বাক্য, সন্ধি, সমাস, কারক, বিভক্তি, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, এবং বিরাম চিহ্নের মতো বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে।

সরকারি চাকরির বাংলা প্রস্তুতিঃ

বাংলা সাহিত্যঃ
প্রাচীন যুগঃ চর্যাপদ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ইত্যাদি।মধ্যযুগঃ মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, অনুবাদ সাহিত্য ইত্যাদি।আধুনিক যুগঃ (ক) গ্রুপ A-- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মশাররফ হোসেন। (খ) গ্রুপ B-- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। (গ) গ্রুপ C-- জসীম উদ্দীন, জীবনানন্দ দাশ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শামসুর রাহমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হুমায়ূন আহমেদ ইত্যাদি।

গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্মঃ
(ক) মহাকাব্যঃ মেঘনাদ বধ কাব্য। (খ) উপন্যাসঃ দুর্গেশনন্দিনী, বিষাদ সিন্ধু, পথের পাঁচালী, শেষের কবিতা, গণদেবতা, লালসালু। (গ) নাটকঃ পলাশীর যুদ্ধ, রক্তাক্ত প্রান্তর, কবর। (ঘ) কাব্যগ্রন্থঃ সোনার তরী, অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, রূপসী বাংলা।

বাংলা ব্যাকরণঃ
ভাষাঃ বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ।ধ্বনি ও বর্ণঃ স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, হ্রস্ব-দীর্ঘ উচ্চারণ।
শব্দঃ শব্দগঠন, শব্দের শ্রেণীবিভাগ (সংজ্ঞা ও উদাহরণ)।বাক্যঃ বাক্য প্রকরণ, গঠন (সরল, জটিল, যৌগিক)।সন্ধিঃ স্বরসন্ধি, ব্যঞ্জনসন্ধি, বিসর্গ সন্ধি (উদাহরণসহ)।সমাসঃ (সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, উদাহরণ)।
কারক ও বিভক্তিঃ (সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, উদাহরণ)।এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, বিরাম চিহ্ন (সংজ্ঞা ও উদাহরণ)।অন্যান্যঃবিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত বাংলা বিষয়ক লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করুন।নিয়মিত অনুশীলন করুন এবং পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।

প্রস্তুতির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

বিভিন্ন প্রকাশনীর বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য বিষয়ক বই সংগ্রহ করুন।গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত পড়ুন এবং নোট তৈরি করুন।বিভিন্ন অনলাইন সোর্স থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রস্তুতি আরও সমৃদ্ধ করুন।নিয়মিত মক টেস্ট দিয়ে নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করুন এবং তা দূর করার চেষ্টা করুন।বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে সমাধান করুন।সৃজনশীল প্রশ্নোত্তরের জন্য নিয়মিত অনুশীলন করুন।

পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রাখুন।বাংলা ভাষার শুদ্ধতা ও মার্জিত ভাষার প্রতি মনোযোগ দিন।ব্যাকরণের নিয়মকানুনগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করুন।বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম ও কবি সাহিত্যিকদের জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।যেকোন চাকরির পরীক্ষার জন্য বাংলা বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি থাকলে, তা অন্যান্য বিষয়েও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

সরকারি চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞনের প্রস্তুতি

সরকারি চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতিতে ভালো করতে হলে, নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়া, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, এবং সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। এছাড়াও, বিগত বছরের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন আসে, তা চিহ্নিত করা এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়া উচিত।

সরকারি চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতিঃ

১.দৈনিক পত্রিকা ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সঃ
নিয়মিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খবরাখবর, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঘটনাবলী, খেলাধুলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক জার্নাল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার পড়ুন।কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন বা ওয়েবসাইট থেকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করুন।

২.সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বই ও অনলাইন রিসোর্সঃ
বাজারে প্রচলিত সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বই এবং অনলাইন কোর্স । সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী) বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

৩.গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহঃ
  • বাংলাদেশ বিষয়াবলীঃ বাংলাদেশের ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, সংবিধান, বিভিন্ন নীতি ও প্রকল্প, বিখ্যাত স্থান, বিশিষ্ট ব্যক্তি, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ইত্যাদি।
  • আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের রাজনীতি, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিভিন্ন চুক্তি ও সম্মেলন, বিভিন্ন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, ইত্যাদি।
  • সাধারণ বিজ্ঞানঃ পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইত্যাদি বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান।
  • কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তিঃ কম্পিউটার বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান, ইন্টারনেট, সামাজিক মাধ্যম, ইত্যাদি।

৪.বিগত বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণঃবিগত বছরের সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন আসে, তা চিহ্নিত করুন।প্রশ্নপত্রের ধরন, প্রশ্ন করার পদ্ধতি, এবং প্রশ্নের মান সম্পর্কে ধারণা নিন।

৫.মক টেস্ট ও মডেল টেস্টঃনিয়মিত মক টেস্ট ও মডেল টেস্ট দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করুন।
পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা অর্জন করুন।

৬.নিয়মিত অনুশীলনঃসাধারণ জ্ঞানের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর অনুশীলন করুন।দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখুন।বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করুন এবং একে অপরের সাথে জ্ঞান আদান প্রদান করুন।

৭.আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায়ঃপরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিন এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখুন।অধ্যবসায়ের সাথে প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই সফল হবেন।উপরের বিষয়গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করলে সরকারি চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতিতে ভালো করা সম্ভব।
সরকারি চাকরি পেতে যে গুণগুলো আপনার থাকতে হবে

সরকারি চাকরির জন্য তথ্য প্রযুক্তির প্রস্তুতি

সরকারি চাকরির জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য, প্রথমে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় আইসিটি অংশের সিলেবাস ভালোভাবে দেখতে হবে। এরপর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের আইসিটি বোর্ড বইটি ভালোভাবে বুঝে পড়া উচিত। এছাড়াও, কিছু সহায়ক বই ও অনলাইন সংস্থান থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে।

সরকারি চাকরির প্রস্তুতিতে আইসিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় আইসিটি থেকে প্রশ্ন আসে, তাই এই অংশে ভালো প্রস্তুতি নেয়া জরুরি। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

১.সিলেবাস পর্যালোচনাঃ প্রথমে, যে নির্দিষ্ট চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার সিলেবাস ভালোভাবে দেখুন।আইসিটি অংশের জন্য কোন কোন টপিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা চিহ্নিত করুন।
সাধারণত, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির মৌলিক ধারণা, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার, নেটওয়ার্কিং, ডাটাবেস, ইন্টারনেট ও ইমেইল, প্রোগ্রামিং, এবং আইসিটি বিষয়ক সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকে প্রশ্ন আসে।

২.পাঠ্যবইয়ের প্রস্তুতিঃমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের আইসিটি বোর্ড বইটি ভালোভাবে পড়ুন। এই বইটি বেসিক কনসেপ্ট ক্লিয়ার করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো চিহ্নিত করে রাখুন এবং রিভিশনের জন্য প্রস্তুত করুন।প্রয়োজনে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির আইসিটি বিষয়ক প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের বইটি দেখতে পারেন, যা উচ্চতর প্রস্তুতির জন্য সহায়ক ।

৩.সহায়ক বই ও অনলাইন সংস্থানঃ
বিভিন্ন প্রকাশনীর আইসিটি বিষয়ক সহায়ক বই পাওয়া যায়, যা থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন ও মডেল টেস্ট অনুশীলন করা যেতে পারে।বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকে আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন টিউটোরিয়াল ও কুইজ দেখা যেতে পারে।

মন্তব্যঃ সরকারি চাকরি পেতে যে গুণগুলো আপনার থাকতে হবে

আজ কালকার যুগে অনেকে মনে করে সরকারি চাকরি টাকা-পয়সা কিংবা মামা খালা ছাড়া হয় না।তারা আসলে ভুল চিন্তা ভাবনা করছেন। কথাটি হচ্ছে যাদের যোগ্যতা নেই তাদের জন্যই এ ঠিক। আর যাদের যোগ্যতা আছে তারা চেষ্টা করলে মেধা দিয়ে ভালো চাকরি পেতে পারেন। নিজেদের স্কিল নিজেরাই কঠোর পরিশ্রম করে বানাতে পারবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আকাশ ইনফো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url